logo
logo

আত্মীয়তার বন্ধনে রিজিক বাড়ে

Blog single photo

কুরআন-সুন্নাহর আলোকে আত্মীয়তার বন্ধন:আত্মীয়তার সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে মানবজাতির হেদায়তগ্রন্থ প্রবিত্র কুরআন এবং নবিয়ে করিম সা.’র প্রবিত্র বাণি হাদিস শরিফ যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর সাথে দৃঢ় অঙ্গিকারে আবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে, যে সম্পর্ক অক্ষুন্ন রাখতে আল্লাহ তাআলা আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায় তাদেরই জন্য রয়েছে অভিশপ্ত এবং তাদেরই জন্য রয়েছে নিকৃষ্ট আবাস’ (সুরা রা’দ/২৫)। মহানবী সা. বলেন, ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখো’। (সহীহুল জামে/১০৮)। তিনি আরো বলেন, ‘তোমরা আত্মীয়তার সম্পর্ক আর্দ্র রাখ, যদিও তা সালাম দিয়ে হয়’। (সহীহুল জা’মে/২৮৩৮)।

মানুষ সামাজীক জীব। আত্মীয়তা ছাড়া বেঁচে থাকা খুবই কষ্টকর। যে লোকের সাথে তার আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজনদের সম্পর্ক ভালো নেই তাকে আমরা অনায়াসেই একজন দুঃখী মানুষ বলে চিহ্নিত করতে পারি। সে যতই বড়লোক হোক বা বাইরে থেকে যতই সুখী মনে হোক। একটি বিষয় খুবই লক্ষণীয় যে, আত্মীয়দের সাথে যতই ঝগড়া, রাগ করুক না কেন একসময় মানুষ তার ভুল বুঝতে প্রারে। বুঝতে পারে ‘আপনে তো আপনে হোতে হে’। আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখাতে সুখ তো আছেই তার সাথে আছে আয়ুবৃদ্ধি এবং রোজিতে বরকত। নবী সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে, তার রোজি প্রশস্ত হোক এবং আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি হোক, সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে’ (বুখারী/মুসলীম)। যে সব প্রাপ্র বা গোনাহের শাস্তি আল্লাহ তাআলা ইহকালেও দেন তার মধ্যে আত্মীয়তার সম্পুর্ক ছিন্ন করাও অন্যতম। আল্লাহর রাসুল সা. বলেন, ‘জুলুমবাজী ও (রক্তের) আত্মীয়তা ছিন্ন করা ছাড়া এমন উপযুক্ত আর কোন পাপাচার নেই যার শাস্তি পাপাচারীর জন্য দুনিয়াতেই আল্লাহ অবিলম্বে প্রদান করেন এবং সে সাথে আখেরাতের জন্যও জমা করে রাখেন’। (আহমাদ, তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ/৪২১১, হাকেম, সহীহুল জা’মে/৫৭০৪)। তিনি আরো বলেন, ‘আল্লাহর আনুগত্য করা হয় এমন আমলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাড়াতাড়ি যে আমলের সওয়াব পাওয়া যায় তা হল আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখা। আর যে বদ আমলের শাস্তি সত্বর দেয়া হয়, তা হল বিদ্রোহ ও আত্মীয়তার বন্ধন ছেদন করা’ (বাইহাকী, সহীহুল জা’মে/৫৩৯১)। সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হল, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন কারী ব্যক্তি জান্নাতে যাবেনা। নবী সা. বলেন, ‘ছিন্নকারী জান্নাতে যাবেনা’। (এবং যারা বজায় রাখে ঐ সম্পর্ক, যা বজায় রাখতে আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন এবং স্বীয় পালনকর্তাকে ভয় করে এবং কঠোর হিসেবের আশঙ্কা রাখে। (সুরা রাদ ১৩:২১। এবং যারা স্বীয় পালনকর্তার সন্তুষ্টির জন্যে সবর করে, নামায প্রতিষ্টা করে আর আমি তাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে এবং যারা মন্দের বিপরীতে ভাল করে, তাদের জন্যে রয়েছে পরকালের শান্তির নিবাস। (সুরা রাদ ১৩:২২)। রাসূলুল্লাহ সা.বলেছেন আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকরী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। জুবাইর ইব্নে মুত্ইম রা.থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, আমি রাসুলল্লাহ সা.কে বলতে শুনেছি, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকরী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (বুখারী শরিফ: অধ্যায় আচার ব্যবহাআল্লাহর অঙ্গীকারকে দৃঢ় ও পাকা-পোক্ত করার পর তা ভঙ্গ করে। তার জন্য আল্লাহতাআলা কঠিন আযাব ও অভিসপ্ত করেছেন যারা এ সম্পর্ক অটুট রাখে না এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে। এবং যারা আল্লাহর অঙ্গীকারকে দৃঢ় ও পাকা-পোক্ত করার পর তা ভঙ্গ করে, আলাহ্ যে, সম্পর্ক বজায় রাখতে আদেশ করেছেন, তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে, ওরা ঐ সমস্ত লোক যাদের জন্যে রয়েছে অভিশপ্ত এবং ওদের জন্যে রয়েছে কঠিন আযাব। (সুরা রাদ ১৩আল্লাহতাআলা বলেন তারাই মুমিন, যারা সন্দেহ পোষণ করে না। তারাই মুমিন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনার পর সন্দেহ পোষণ করে না এবং আল্লাহর পথে প্রাণ ও ধন-সম্পদ দ্বারা জিহাদ করে। তারাই সত্যনিষ্ঠ। (সূরা আল হুজরাত ৪৯:১৫)। আল্লাহতালা বলেছেন রাসূলুল্লাহ সা. হুকুম মান্য করাই আল্লাহরই হুকুম মান্য করা ।

যে লোক রসূলের হুকুম মান্য করবে সে আল্লাহর ই হুকুম মান্য করল। আর যে লোক বিমুখতা অবলম্বন করল, আমি আপ্রনাকে (হে মুহাম্মদ),তাদের জন্য রক্ষণাবেক্ষণকারী নিযুক্ত করে পাঠাইনি। (সূরা আন নিসা ৪:৮০)।

আত্মীয়তার হক রাহমানের মূল:রাসুলল্লাহ সা.বলেছেন যে, আত্মীয়তার হক রাহমানের মূল। আল্লাহতাআলা বলেছেন, আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত: রাসুলল্লাহ সা. বলেছেন, আত্মীয়তার হক রাহমানের মূল। আল্লাহতাআলা বলেছেন, যে তা সজ্জীবিত রাখবে আমি তাকে সজ্জিবিত রাখবো। আর যে তা ছিন্ন করবে, আমি তাকে ছিন্ন করবো। (বুখারী শরিফ: অধ্যায় আচার ব্যবহার নং ৫৫৬৩)।

:২৫)

র নং ৫৫৫৮)।

বুখারী/৫৯৮৪; মুসলিম/২৫৫৬, তিরমিযী)



আপনার মতামত লিখুন

Top