logo
logo

ভালো কাজে সহযোগিতা করলে যে সওয়াব পাওয়া যায়

Blog single photo

কল্যাণমূলক যে কোনো কাজে একে অন্যের সাহায্য করলে কর্মসম্পাদনকারী যতটা পুণ্য পাবে, ঠিক ততটাই পুণ্য পাবে কল্যাণমূলক কাজে সাহায্যকারী। এ ব্যাপারে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে লোক কোনো কল্যাণের পথ দেখায় সে ঠিক ততটাই পুণ্য পাবে যতটা পুণ্য কর্মসম্পাদনকারী নিজে পাবে।’ (মুসলিম: ৪৭৯৩)। পুণ্যের কাজে সহযোগিতা করার ফলে যেমন পুণ্য অর্জন করা যায়, তদ্রূপ অন্যায় কাজে সহযোগিতা করার ফলেও গুনাহের ভাগীদার হতে হয়। যেমন, কেউ যদি দুনিয়াতে এমন কোনো পদ্ধতি চালু করে, যার ফলে মানুষ পাপের পথে ধাবিত হয়; তাহলে এ পাপের একটি অংশ ওই ব্যক্তির আমলনামায় চলে যায়, যে এই পদ্ধতিটি প্রথম উদ্ভাবন করেছিল। শুধু তাই নয়, মন্দকার্য উদ্ভাবনকারী যদি মৃত্যুবরণ করে, তবুও তার আমলনামায় একটি অংশ চলে যাবে। এ সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘ফলে কেয়ামতের দিন ওরা পূর্ণমাত্রায় বহন করবে ওদের পাপভার এবং পাপভার তাদেরও, যাদের তারা তাদের অজ্ঞতাহেতু বিপথগামী করে। শুনে নাও, খুবই নিকৃষ্ট বোঝা, যা তারা বহন করে।’ (সুরা নাহল: ২৫)। অর্থাৎ যারাই কারও পথভ্রষ্টতার কারণ হবে তারাই ভ্রষ্টদের যাবতীয় পাপের ভাগীদার হবে। এ সম্পর্কে অন্য আয়াতে আল্লাহতায়ালা আরও স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমি মৃতদের জীবিত করি এবং লিখে রাখি, যা তারা আগে পাঠায় এবং যা তারা পেছনে রেখে যায়। আমি প্রত্যেক বস্তু স্পষ্ট কিতাবে সংরক্ষিত রেখেছি।’ (সুরা ইয়াসিন: ১২)

উপরিউক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরে ইবনে কাসিরে বলা হয়েছে, দুনিয়াতে কোনো ভালো কাজের পদ্ধতি চালু করলে মরণের পরেও তার কল্যাণ পাওয়া যায়। আবার খারাপ কোনো পদ্ধতি চালু করলেও তার একটি অংশ কবরে যায়। উদাহরণত, কেউ মানুষকে দ্বীনি শিক্ষা দিল, বিধিবিধান বর্ণনা করল অথবা কোনো পুস্তক রচনা করল, যা দ্বারা মানুষের দ্বীনি উপকারিতা লাভ করা যায় অথবা কোনো ধরনের জনহিতকর কাজ করল—তার এই সৎকর্মের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া যতদূর পৌঁছবে এবং যতদিন পর্যন্ত পৌঁছতে থাকবে, সবই তার আমলনামায় লিখিত হতে থাকবে। অনুরূপভাবে কোনোরকম মন্দকার্য যার মন্দ ফলাফল ও তার ক্রিয়া পৃথিবীতে থেকে যায় অথবা কেউ যদি নিপীড়নমূলক আইনকানুন প্রবর্তন করে কিংবা এমন কোনো প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে, যা মানুষের আমল-আখলাককে ধ্বংস করে দেয় কিংবা মানুষকে কোনো মন্দ পথে পরিচালিত করে, তবে তার এ মন্দকর্মের ফলাফল ও প্রভাব যতদিন পর্যন্ত তা দুনিয়াতে কায়েম থাকবে, ততদিন তার আমলনামায় সব লিখিত হতে থাকবে। (ইবন কাসির)

কেউ ভালো কাজে সাহায্য করলে হবে সওয়াব আর খারাপ কাজে সাহায্য করলে হবে গুনাহ। এ সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো উত্তম পন্থা প্রবর্তন করে, তার জন্য রয়েছে এর সওয়াব এবং যত মানুষ এই পন্থার ওপর আমল করবে, তাদের সওয়াব—অথচ পালনকারীদের সওয়াব মোটেও হ্রাস করা হবে না। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি কোনো কুপ্রথা প্রবর্তন করে, সে তার গুনাহ ভোগ করবে এবং যত মানুষ এই কুপ্রথা পালন করতে থাকবে, তাদের গুনাহও তার আমলনামায় লিখিত হবে। অথচ আমলকারীর গুনাহ হ্রাস করা হবে না।’ (মুসলিম: ১০১৭)


আপনার মতামত লিখুন

logo
Top