‘সম্পর্ক শেষ’ এমন শব্দ যা তালাক ও অন্য অর্থ বহন করে। শরিয়তের পরিভাষায় এজাতীয় শব্দে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক।
আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷
সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)
তালাক হচ্ছে একমাত্র আইনগত পদ্ধতি যার মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। সাধারণত একটি তালাক অনেকগুলো বিষয়ের জন্ম দেয়। তালাক একটি বিবৃতি বা পদ্ধতি-একে অপরের কাছ থেকে আলাদা হওয়ার জন্য। যা স্বামী বা স্ত্রী দুই পক্ষ থেকেই আসতে পারে। বাংলাদেশে তালাক সম্পর্কিত আইন ও নিয়ম মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশ ১৯৬১-এ পাওয়া যাবে। যা বাংলাদেশে মুসলিমদের জন্য কার্যকর লিখিত আইন। অন্য ধর্মানুসারীদের-যেমন খ্রিস্টান ও বৌদ্ধদের জন্য আলাদা লিখিত আইন আছে। তবে বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত হিন্দুদের জন্য তালাকের কোনো লিখিত আইন নেই। বিবাহ এবং তালাক বাংলাদেশে সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে, মুসলিম পারিবারিক আইন বা শরিয়া আইন দারা নিয়ন্ত্রিত হয়। পশ্চিমা দেশগুলোতে তালাক-এর জন্য আইনজীবী থাকা জরুরি, তারা আইনজীবী ছাড়া তালাক এর কোনো উদ্যোগ নেয় না কিন্তু এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে তালাক এর জন্য আইনজীবী থাকা সবসময় জরুরি মনে করা হয় না বা সব সময় আইনজীবীকে ডাকার প্রয়োজন ও মনে করা হয় না। বাংলাদেশের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করলে দেখা যায় যে এখানে সমঝোতার ভিত্তিতে তালাক দেয়ার সংখ্যা বেশি। আইনেও সমঝোতার ভিত্তিতে তালাক দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। সাধারণত যখন এক পক্ষ সে নারী, পুরুষ যাই হোক না কেন তালাক-এর জন্য যখন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করে তখন অপর পক্ষ এটাকে খু্বই খারাপভাবে নিয়ে তালাক কার্যকর কিভাবে বন্ধ করা যাই সেটা নিয়ে চিন্তা করে এবং উদ্যোগ গ্রহণ করে। বাংলাদেশে শুধু তালাক-এর জন্য স্পেশাল আইনজীবী নেয় বা প্রয়োজন মনে করে না যতক্ষণ না অপর পক্ষ কোনো ফৌজদারী মামলা করছে। স্বামীর জন্য তালাক দেয়া হচ্ছে আইনগত অধিকার যা বাংলাদেশি আইন এই বলে দিচ্ছে। যেসব আইনজীবী বাংলাদেশে পারিবারিক বিষয় নিয়ে বিশেষ করে পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ ১৯৮৫-এর আওতায় যারা প্রাকটিস করে তারাই সাধারণত তালাক আইনজীবী হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশে শুধুমাত্র তালাক নিয়ে প্র্যাকটিস করে এমন আইনজীবীর সংখ্যা একদম নেই বললেই চলে। ঢাকা শহরে খুবি কম চেম্বার বা ল-ফার্ম আছে যারা শুধুমাত্র পারিবারিক বিষয় নিয়ে প্র্যাকটিস করে।
সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ