logo
logo

কাজের শুরুতে সংকল্প বা নিয়তের গুরুত্ব সম্পর্কিত হাদিস

Blog single photo

إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ


অর্থ: প্রকৃতপক্ষে সকল কাজ (এর ফলাফল) নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। (বুখারি)


ইসলামে বিশুদ্ধ নিয়তের গুরুত্ব অনেক বেশি। সালাত, সাওম থেকে শুরু করে সবকিছুতেই নিয়ত বিশুদ্ধ হওয়া জরুরি। নিয়তের বিশুদ্ধতা না থাকলে ভালো কাজও মূল্যহীন। আল্লাহর কাছে সেই কাজ গ্রহণযোগ্য হবে না। নিয়তে গরমিল থাকার কারণে ভালো কাজ করেও জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হতে হবে।এই হাদিসটি সহিহ বুখারির সর্বপ্রথম হাদিস। এর তাৎপর্য অত্যন্ত ব্যাপক। মানুষ দৈনন্দিন জীবনে যা করে, সব কিছুই নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। এ হাদিস দ্বারা কাজের উদ্দেশ্যের গুরুত্ব বুঝানো হয়েছে। নিয়ত আরবি শব্দ। নিয়ত হচ্ছে মনের ঐকান্তিক ইচ্ছা বা সংকল্প। শরি'আতের পরিভাষায় খাঁটি নিয়ত হলো একনিষ্ঠতার সঙ্গে শুধু মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করা।

পরকালে মানুষের সকল কৃতকর্মের হিসাব হবে। সেদিন কে কোন নিয়তে কাজ করেছে, তার প্রতি দৃষ্টিপাত করা হবে। মানুষ সৎ উদ্দেশ্যে কাজ করলে পুরস্কার পাবে। নেক নিয়তে কাজ করে ব্যর্থ হলেও পুরস্কার পাবে। আর মন্দ উদ্দেশ্যে কাজ করলে শাস্তি পাবে। যেমন যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সমাজসেবা করে, তাদের সমাজসেবাও হবে, আবার তারা আল্লাহর নিকট প্রতিদানও পাবে। আবার যারা লোক দেখানোর নিয়তে সমাজসেবা করে, তাদের শুধু সমাজসেবাই হবে। তারা আল্লাহর নিকট কোনো প্রতিদান পাবে না। কারণ, আল্লাহ তা'আলা মানুষের চেহারার দিকে না তাকিয়ে অন্তর দেখবেন। নিয়ত সঠিক না হলে ভালো কাজও মন্দ হিসেবে পরিগণিত হবে। লোক দেখানো কাজকে ইসলামের পরিভাষায় রিয়া বলে। রিয়া সম্পর্কে কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বিশেষ এক প্রেক্ষাপটে এ হাদিসটি বর্ণনা করেন। আর তা হলো- উম্মে কায়স নামের একজন নারী ইসলাম গ্রহণ করে মদিনায় হিজরত করেন। তখন জনৈক ব্যক্তি তাঁকে বিয়ে করার জন্য মদিনায় হিজরত করে। ঐ ব্যক্তির উদ্দেশ্য জানতে পেরে রাসুলুল্লাহ (সা.) এ হাদিসটি বর্ণনা করেন। যার মূল বক্তব্য হলো- আল্লাহ তা'আলার সন্তষ্টির জন্য হিজরত করা অত্যন্ত পুণ্যময় কাজ। আল্লাহর সন্তষ্টির নিয়ত না থাকায় লোকটি হিজরতের সাওয়াব থেকে বঞ্চিত হলো।

সুতরাং আমরা বিশুদ্ধ নিয়তে সকল কাজ করব। লোক দেখানো বা দুনিয়াবি লাভের আশায় কোনো কাজ করব না; বরং আল্লাহ তা'আলা ও তাঁর রাসুলের সন্তষ্টির জন্য কাজ করব।

শিক্ষা

১. আমাদের প্রতিটি কাজে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে। 

২. কর্মফল নিয়তের উপরই নির্ভশীল। নিয়ত ভালো হলে উত্তম প্রতিদান পাবে। আর নিয়ত খারাপ হলে ভালো কাজ করেও সাওয়াব পাবে না। 

৩. আল্লাহ তা'আলা মানুষের বাহ্যিক আমলের সঙ্গে সঙ্গে অন্তরের অবস্থাও লক্ষ করেন। 

৪. প্রচারণামূলক লোক দেখানো ইবাদাত বা কাজ পরিহার করা উচিত। 

৫. মৃত্যুর পর সব কাজেরই হিসাব হবে। 

৬. নিয়ত খারাপ হলে ভালো কাজ করেও পরকালে শাস্তি পেতে হবে।

আপনার মতামত লিখুন

Top