logo
logo

৬৭ তম সূরা মূলক বাংলা অর্থ

Blog single photo

সূরা আল-মুলক (আরবি ভাষায়: الملك) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ৬৭ তম সূরা, এর আয়াত অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ৩০ এবং রূকুর সংখ্যা ২। সূরা আল-মুলক মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।

এই সূরাটির প্রথম আয়াতের تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ বাক্যাংশের الْمُلْكُ অংশ থেকে এই সূরার নামটি গৃহীত হয়েছে; অর্থাৎ, যে সূরার মধ্যে الملك (‘মুলক‌’) শব্দটি আছে এটি সেই সূরা।


পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি

(১) বরকতময় তিনি যার হাতে সর্বময় কর্তৃত। আর তিনি সব কিছুর ওপর সর্বশক্তিমান।

(২) যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি তোমাদের পরিক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম। আর তিনি মহাপরাক্রমশালি, অতিশয় ক্ষমাশীল।

(৩) যিনি সাত আসমান স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। পরম করুণাময়ের সৃষ্টিতে তুমি কোনো অসামঞ্জস্য দেখতে পাবে না। তুমি আবার দৃষ্টি ফিরাও, কোনো ত্রুটি দেখতে পাও কি?

(৪) অতঃপর তুমি দৃষ্টি ফিরাও একের পর এক, সেই দৃষ্টি অবনমিত ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।

(৫) আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপ দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং সেগুলোকে শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপের বস্তু বানিয়েছি। আর তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের আজাব।

(৬) আর যারা তাদের রবকে অস্বীকার করে, তাদের জন্য রয়েছে যাহান্নামের আজাব। আর কতই না নিকৃষ্ট সেই প্রত্যাবর্তনস্থল!

(৭) যখন তাদের তাতে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা তার বিকট শব্দ শুনতে পাবে। আর তা উথলিয়ে উঠবে।

(৮) ক্রোধে তা ছিন্ন ভিন্ন হওয়ার উপক্রম হবে। যখনই তাতে কোনো দলকে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তার প্রহরিরা তাদের জিজ্ঞাসা করবে, ‘তোমাদের নিকট কি কোনো সতর্ককারি আসেনি’?

(৯) তারা বলবে, ‘হ্যা, আমাদের নিকট সতর্ককারি এসেছিল। তখন আমরা (তাদের) মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত করেছিলাম এবং বলেছিলাম, ‘আল্লাহ কিছুই নাজিল করেননি। তোমরা তো ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছ’।

(১০) আর তারা বলবে, ‘যদি আমরা শুনতাম অথবা বুঝতাম, তাহলে আমরা জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসিদের মধ্যে থাকতাম না’।

(১১) অতঃপর তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে। অতএব, ধ্বংস জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসিদের জন্য।

(১২) নিশ্চয়ই যারা তাদের রবকে না দেখেই ভয় করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও বড় প্রতিদান।

(১৩) আর তোমরা তোমাদের কথা গোপন করো অথবা তা প্রকাশ করো, নিশ্চয়ই তিনি অন্তরসমূহে যা আছে সে বিষয়ে সম্যক অবগত।

(১৪) যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি যানেন না? অথচ তিনি অতি সূক্ষ্মদর্শী, পূর্ণ অবহিত।

(১৫) তিনিই তো তোমাদের জন্য জমিনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে-প্রান্তরে বিচরণ কর এবং তাঁর রিজিক থেকে তোমরা আহার করো। আর তাঁর নিকটই পুনরুত্থান।

(১৬) যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদেরসহ জমিন ধসিয়ে দেওয়া থেকে কি তোমরা নিরাপদ হয়ে গেছ, অতঃপর আকস্মিকভাবে তা থর থর করে কাঁপতে থাকবে।

(১৭) যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের ওপর পাথর নিক্ষেপকারি ঝোড়ো হাওয়া পাঠানো থেকে তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছ, তখন তোমরা যানতে পারবে কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী?

(১৮) আর অবশ্যই তাদের পূর্ববর্তীরাও অস্বীকার করেছিল। ফলে কেমন ছিল আমার প্রত্যাখ্যান (এর শাস্তি)?

(১৯) তারা কি লক্ষ্য করেনি তাদের উপরস্থ পাখিদের প্রতি, যারা ডানা বিস্তার করে ও গুটিয়ে নেয়? পরম করুণাময় ছাড়া অন্য কেউ এদের স্থির রাখে না। নিশ্চয়ই তিনি সব কিছুর সম্যক দ্রষ্টা।

(২০) পরম করুণাময় ছাড়া তোমাদের কি আর কোনো সৈন্য আছে, যারা তোমাদের সাহায্য করবে? কাফিররা শুধু তো ধোঁকায় নিপতিত।

(২১) অথবা এমন কে আছে, যে তোমাদের রিজিক দান করবে যদি আল্লাহ তাঁর রিজিক বন্ধ করে দেন? বরং তারা অহমিকা ও অনীহায় নিমজ্জিত হয়ে আছে।

(২২) যে ব্যক্তি উপুড় হয়ে মুখের ওপর ভর দিয়ে চলে সে কি অধিক হেদায়াতপ্রাপ্ত না কি সেই ব্যক্তি যে সোজা হয়ে সরল পথে চলে?

(২৩) বলো, ‘তিনিই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জন্য শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি এবং অন্তকরণসমুহ দিয়েছেন। তোমরা খুব অল্পই শোকর করো’।

(২৪) বলো, ‘তিনিই তোমাদের জমিনে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর কাছেই তোমাদের সমবেত করা হবে’।

(২৫) আর তারা বলে, ‘সে ওয়াদা কখন বাস্তবায়িত হবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।

(২৬) বলো, ‘এ বিষয়ের জ্ঞান আল্লাহরই নিকট। আর আমি তো স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র’।

(২৭) অতঃপর তারা যখন তা আসন্ন দেখতে পাবে, তখন কাফিরদের চেহারা মলিন হয়ে যাবে এবং বলা হবে, ‘এটাই হলো তা, যা তোমরা দাবি করছিলে’।

(২৮) বলো, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি’? যদি আল্লাহ আমাকে এবং আমার সঙ্গে যারা আছে, তাদের ধ্বংস করে দেন অথবা আমাদের প্রতি দয়া করেন, তাহলে কাফিরদের যন্ত্রণাদায়ক থেকে কে রক্ষা করবে’?

(২৯) বলো, ‘তিনিই পরম করুণাময়। আমরা তাঁর প্রতি ইমান এনেছি এবং তাঁর ওপর তাওয়াক্কুল করেছি। কাজেই তোমরা অচিরেই যানতে পারবে কে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে’?

(৩০) বলো, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কী, যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভে চলে যায়, তাহলে কে তোমাদের বহমান পানি এনে দিবে’?

আপনার মতামত লিখুন

logo
Top